September 22, 2024, 1:48 am

সংবাদ শিরোনাম
কক্সবাজার সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেবে ফয়জুল আজীম নোমান এর যোগদান জয়পুরহাটের ক্ষেতলালে শহীদ জিয়া ও সকল শহীদদের স্মরণে স্বাধীনতা কাপ ফুটবল টুর্নামেন্টে সংবাদ বিজ্ঞপ্তি কু‌ড়িগ্রা‌মের উলিপু‌রে বিদ‌্যুৎস্পৃষ্টএক যুব‌কের মৃত্যু যশোরে বালিচাপা অবস্থায় প্রতিবন্ধী যুবকের অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার কুড়িগ্রামের রাজিবপুরে ৪০ পিস ইয়াবা ও ১ টি ভ্যান জব্দসহ ২ জন মাদক কারবারি গ্রেফতার জয়পুরহাটের ক্ষেতলালে নবাগত পুলিশ সুপারের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত দুর্নীতি বিরোধী জাতীয় সমন্বয় কমিটির উদ্যোগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মুজাফর রহমান মিলনায়তনে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত জীবাশ্ম জ্বালানীর ব্যবহার বন্ধে কুড়িগ্রামে জলবায়ু ধর্মঘট খুলনা দৌলতপুর রেলস্টেশন ও মহসিন মোড় কাঁচাবাজারে এলাকাবাসীর উদ্যোগে পরিচ্ছন্নতা অভিযান

গাজীপুরে আ.লীগের উন্নয়নের আশ্বাস, বিএনপি চায় সহমর্মিতা

গাজীপুরে আ.লীগের উন্নয়নের আশ্বাস, বিএনপি চায় সহমর্মিতা

ডিটেকটিভ নিউজ ডেস্ক

গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা ও জাতীয় উন্নয়নকে পুঁজি করে ভোটারদের কাছে ভোট চাইছে আওয়ামী লীগ। এদিকে মামলা-হামলার শিকার হওয়ার তথ্য তুলে ধরে সহমর্মিতা আদায়ের চেষ্টা করছে বিএনপি। উভয় দলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য পাওয়া গেছে।

গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট আজমত উল্লাহ খানবলেন, ‘আওয়ামী লীগের সরকার দেশে যে উন্নয়ন করেছে, বিগত কোনও সরকার তা করতে পারেনি। মহানগরের উন্নয়নের জন্য মানুষ আওয়ামী লীগের প্রার্থীকেই ভোট দেবে।’ আওয়ামী লীগের উন্নয়নের ফিরিস্তি তুলে ধরে অ্যাডভোকেট আজমত উল্লাহ খান বলেন, ‘যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন হয়েছে সবচেয়ে বেশি। ঢাকার পরে চট্টগ্রামে উড়ালসেতু হয়েছে, রাজধানী থেকে দেশের বিভিন্ন রুটের সড়ক প্রশস্ত হয়েছে। বিধবা ভাতা, বয়ষ্ক ভাতা, মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য সম্মানি, উচ্চশিক্ষা বিস্তারে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা, স্বপ্নের পদ্মা সেতু নির্মাণসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে এ সরকারের অবদান মানুষ ভুলে যায়নি। বিনামূল্যে উচ্চ শিক্ষার সুযোগ পাচ্ছে শিক্ষার্থীরা। তেমনি গাজীপুরের মানুষও এর সুফল ভোগ করছে এবং তা শেখ হাসিনার সরকারের অবদান। গাজীপুর মহানগরবাসী বুঝেছে অবকাঠামো, শিক্ষা, সংষ্কৃতি প্রভৃতি উন্নয়নের জন্য আওয়ামী লীগ সরকারের বিকল্প নেই। এ কারণেই মানুষ আওয়ামী লীগের নৌকায় ভোট দেবে।’

গাজীপুর জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক অ্যাডভোকেট জামিল হাসান দুর্জয় বলেন, ‘গাজীপুর-ময়মনসিংহ এবং গাজীপুর-টাঙ্গাইল সড়কে চার লেন এবং তিনটি উড়ালসেতু দৃশ্যমান, এরকম অনেক কাজ আওয়ামী লীগ সরকারের করা। যে সরকার এমন বড় কাজ করতে পারে, সে সরকারের জন্য ছোট কাজ করা তো আরও সহজ। অথচ মহানগরের অভ্যন্তরীণ রাস্তাঘাট, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, পয়ঃনিষ্কাশন, পানি নিষ্কাশনসহ নানা অনুন্নয়নের কথা বলছেন নগরবাসী। এ কাজগুলোর দায়িত্ব মহানগর মেয়রের, এর দায়ভারও তার। তিনি বা তার লোকজন সরকারের ওপর দায় চাপিয়ে দায়িত্ব এড়িয়ে যেতে পারেন না। আজকাল মানুষ নিজেদের অধিকারের ব্যাপারে খুবই সচেতন।’

তিনি আরও বলেন, ‘আবেগী কথায় মানুষ আজ বিশ্বাস করে না। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি নির্বাচনে মানুষ পরিবর্তনে বিশ্বাসী। গত পাঁচ বছরে তারুণ্যের পরীক্ষায় বিএনপির মেয়র উত্তীর্ণ হতে পারেননি। ইতোমধ্যে সড়ক নিরাপত্তা, শিক্ষাসহ সামাজিক কার্যক্রম সম্পন্ন করে জাহাঙ্গীর আলম তারুণ্যের মন জয় করেছেন। গাজীপুরবাসী তাকে সুযোগ দিলে মহানগরের চিত্র পরিবর্তন হয়ে যাবে। সব কিছু বিবেচনা করে মানুষ আওয়ামী লীগের প্রার্থী অ্যাডভোকট জাহাঙ্গীর আলমকেই ভোট দেবে।’

মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক আতাউল্লাহ ম-ল বলেন, ‘সরকারদলীয় একজন ব্যক্তি যেভাবে সরকারের উচ্চ পর্যায়ে যোগাযোগ করতে পারবেন, অন্য দলের ব্যক্তিরা সেভাবে পারবেন না। আর মহানগরের উন্নয়ন করতে হলে কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ এবং লবিংয়ের কোনও বিকল্প নাই। এ কাজটি আওয়ামী লীগের প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলমের মাধ্যমেই সম্ভব। ভোটাররা এ বিষয়টি বুঝে গেছেন, তাই আওয়ামী লীগের প্রার্থীই হবে ভোটারদের পছন্দের প্রার্থী।’

আরেকজন যুগ্ম সম্পাদক এস এম মোকসেদ আলম বলেন, ‘অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর আলম সরকারি দলের মনোনীত প্রার্থী। এই কারণে মহানগরের নাগরিকদের জন্য বেশি বেশি কাজ করতে পারবেন। উন্নয়নের জন্য নানা ধরণের প্রকল্প আনতে পারবেন, অর্থ বরাদ্দ আনতে পারবেন। নাগরিকদের প্রয়োজন উন্নয়ন। শুধু শুধু মেয়র নির্বাচন করা ভোটারদের উদ্দেশ্য নয়। বিগত দিনে সরকারবিরোধী একজনকে মেয়র নির্বাচিত করে গাজীপুরবাসী দেখেছে কী হয়েছে গাজীপুরে।’

গত মেয়াদে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র ছিলেন বিএনপি মনোনীত প্রার্থী এবং এখনও আছেন জানিয়ে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কাজী সাইয়্যেদুল আলম বাবুল বলেন, ‘সরকার খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলা দিয়ে জেলে দিয়েছে। সাধারণ মানুষের কথা তো বাদই দিলাম। কেন গাজীপুর মহানগরে আশানুরূপ উন্নয়ন হয়নি তা মানুষ ভালো করেই জানেন। বিএনপির প্রতি সরকারের নির্যাতনের ফলে মানুষের মধ্যে সহমর্মিতা সৃষ্টি হয়েছে। মানুষের সহমর্মিতা, ভালোবাসা আর সহানুভূতি নিয়েই এবার গাজীপুরে মেয়র হবেন বিএনপি তথা ২০ দলীয় জোটের প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা হাসান উদ্দিন সরকার।’

এদিকে গত মেয়র নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থীর বিজয়ের পরও মিথ্যা মামলা দিয়ে কাজ করতে দেওয়া হয়নি দাবি করে সরকারকে দোষারোপ করেছেন দলের নেতারা। গাজীপুর জেলা বিএনপির সভাপতি ও কেন্দ্রীয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন বলেন, ‘গত নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী এক লাখেরও বেশি ভোটে নির্বাচিত হয়েছে। সেই জনপ্রিয় মেয়রকে মাত্র ৬ মাসের মাথায় অনেকগুলো মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে উন্নয়নমূলক কোনও কাজই করতে দেওয়া হয়নি। এটি নগরবাসী দেখেছে। দেশব্যাপী বিএনপি ও ২০ দলীয় জোট নেতাকর্মীদের নামে মিথ্যা মামলা, বাড়ি থেকে ধরে এনে সাজানো মামলায় জড়িয়ে দেওয়াসহ নানা হয়রানির খবর দেশবাসীর সঙ্গে গাজীপুর মহানগরবাসীরও অজানা নয়।’ তিনি বলেন, ‘এসব অত্যাচার, নির্যাতন, নিপীড়ন থেকে মানুষকে বাঁচাতে গাজীপুরের নাগরিকরা এবারও বিএনপি তথা ২০ দলীয় জোটের প্রার্থীকে ভোট দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেবে। আর বিএনপির মনোনীত প্রার্থী গাজীপুরের মেয়র নির্বাচিত হলে এখান থেকেই শুরু হবে অত্যাচার, নির্যাতন, নিপীড়নের মূলোৎপাটন।’

জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কাজী সাইয়্যেদুল আলম বাবুল বলেন, ‘গাজীপুর সিটি নির্বাচনে জয়লাভ করে শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের মাধ্যমে খালেদা জিয়ার মুক্তির আন্দোলন শুরু হবে। আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি তথা ২০ দলীয় জোট সরকার গঠন করবে। তখন হাসান উদ্দিন সরকারই মহানগরের উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে পারবে। আজ মানুষ তা উপলব্ধি করতে পেরেছে। এ কারণে মহানগরের ভোটারেরা এখন হাসান উদ্দিন সরকারের পক্ষে।’ স্থানীয় সরকারের উন্নয়ন কাজ কীভাবে হয় গাজীপুর মহানগরবাসী তা জানেন বলে দাবি করে গাজীপুর জেলা বিএনপির শ্রম বিষয়ক সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘মহানগরের নিজস্ব তহবিল ছাড়াও দেশীয় ও বহির্বিশ্বের বিভিন্ন সংস্থার আর্থিক সহায়তা আদায়ে কেন্দ্রীয় সরকারে প্রয়োজন হয় না। কেন্দ্রীয় সরকার ছাড়াও স্থানীয় সরকার উন্নয়ন সম্ভব। বিগত বিএনপির মেয়রকে মামলা দিয়ে হয়রানি না করলে গাজীপুর মহানগরের অনেক উন্নয়ন হতো।’

প্রসঙ্গত, ২০১৩ সালে গাজীপুর ও টঙ্গি পৌরসভার ৩২৯ দশমিক ৫৩ বর্গকিলোমিটার এলাকা নিয়ে গাজীপুর মহানগরের যাত্রা শুরু হয়। বর্তমানে গাজীপুর মহানগরের ভোটার সংখ্যা ১১ লাখ ৩৭ হাজার ৭৩৬ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার সংখ্যা ৫ লাখ ৬৯ হাজার ৯৩৫ এবং নারী ভোটার সংখ্যা ৫ লাখ ৬৭ হাজার ৮০১ জন।আগামী ২৬ জুন এই মহানগরে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।

Share Button

     এ জাতীয় আরো খবর